Takiaislam

আমি খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ। আমার শখের তালিকার শীর্ষে বই পড়া ও সংগ্রহ করা- লেখালেখি করা এবং রান্না করা। কবিতার প্রতি অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে ছোটবেলা থেকে। ইসলামি সাহিত্য আমাকে বেশি আকর্ষিত করে। ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তবে আমার ছোট জীবনে ভ্রমণের সুযোগ খুব কম হয়েছে। ইচ্ছে আছে বিশ্ব ঘুরে দেখার। সর্বপ্রথম আমার নিজের দেশটার আনাচেকানাচে ঘুরে দেখতে ইচ্ছে করে। তুরস্কের ব্লু মসজিদ- জর্দানের পেট্রো- জেরুজালেমের আল-আকসা- পেরুর ঐতিহাসিক স্থাপনা- মিশরের পিরামিড- আফগানিস্তানের বামিয়ান দেখার ইচ্ছে হয়। ইচ্ছে হয় ফ্রান্সের প্যারিসে একটি বিকেল অতিবাহিত করতে। ইতালির ভেনিস বন্দরে জলপথে দীর্ঘ ভ্রমণের সাক্ষী হতে। মনে হয় জাপানের ফুজি পর্বত কিংবা প্রাচীন চীনের হাংঝু লেক আমার ভ্রমণের তালিকা দীর্ঘ করুক। স্নো ফল- চেরি ব্লসম কিংবা ম্যাপল পাতা আমার ভ্রমণের ইচ্ছেকে আরো তীব্র করে। তবে এটাও বিশ্বাস করি দুনিয়া সব পূরণের জায়গা নয়। আমার প্রবল আকাঙ্ক্ষা শুধু একবার আল্লাহর পবিত্র ঘর তাওয়াফ করব এবং আমার রাসূলের -সা.- রওজা আমার চর্মচক্ষু দেখবে। এই ইচ্ছেটুকু যদি মহান আল্লাহ কবুল করেন তবে দুনিয়ার জীবনে আমার আর কোনো আফসোস থাকবে না। পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য আমার দেখা হয়ে যাবে। আমি প্রকৃতিপ্রেমী একজন মানুষ। বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস- ঐতিহাসিক স্থাপনা এগুলো আমার বেশ আগ্রহের জায়গা। নতুন নতুন বিষয় জানতে ও এক্সপ্লোর করতে ভালোলাগে। বেশ কিছু বিষয়ে আগ্রহ কাজ করে স্পেশালি এ্যাস্ট্রোফিজিক্স- হিউম্যান সাইকোলজি- ইতিহাস- ফিলোসফি ইত্যাদি আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি মানুষের মাঝে সম্ভাবনা রয়েছে এবং মানুষ মাত্রই ভুল। তাই নিজের যেকোনো ভুল শুধরে নিতে আমি দ্বিধাবোধ করি না। আমার মনে হয় রুচিশীলতা মানেই শৌখিনতা নয়। কথাবর্তা- চালচলন- আচার-আচরণ এসকল সাধারণ বিষয়গুলো কে মার্জিত ভাবে উপস্থাপন করার দ্বারাও যথেষ্ট রুচিশীলতার ছাপ রাখা যায়। অত্যধিক সাজসজ্জা এবং সেলিব্রেশন কলবকে মেরে ফেলে। নিরিবিলি পরিবেশ- অন্ধকার এসব আমাকে খুব আকর্ষন করে। অতিরিক্ত কথা বলা মানুষ আমাকে কিছুটা বিরক্ত করে। যদিও এটা ঢালাওভাবে দোষণীয় বলছি না- আমার ব্যক্তিগত অপছন্দ মাত্র। অপ্রয়োজনে খরচ করা এবং কৃপণতা উভয়ই অপছন্দ করি। মধ্যস্থতা অবলম্বনই শ্রেয়। অতিরিক্ত রাগী- একরোখা- অলস- ব্যক্তিত্বহীন এবং অপরিষ্কার মানুষ অপছন্দ করি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আলোচনা সাপেক্ষে পরিবেশ উপযোগী এবং ব্যালেন্সড সিদ্ধান্ত নিতে পারাকে আমি অত্যন্ত প্রশংসনীয় গুণ মনে করি। তথাকথিত মানবাধিকার- ফেমিনিজম- গণতন্ত্র- সমানাধিকার এসব কনসেপ্ট ঘৃণা করি। ব্যক্তিগত শখ- রুচিবোধ- পছন্দ- অপছন্দ একজন ব্যক্তি কে জানতে সাহায্য করে। এসকল বিষয় সহ ব্যক্তিগত সকল বিষয়- পরিবার- সমাজ- রাজনীতি- অর্থনীতি- আত্মীয়তা সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে যা শরিয়ত বিরোধী তা অবশ্যই আমার কাছে ঘৃণিত এবং অপছন্দ এবং যেসকল বিষয় আল্লাহ এবং তার রাসূল -সা.- পছন্দ করেছেন সেসকল বিষয়ই আমার নিকট পছন্দনীয়। শরীয়ত বহির্ভূত কোনো কিছু্ই মুমিনের পছন্দ- অপছন্দ অথবা শখের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারে না। কোরআন-সুন্নাহ অর্থ্যাৎ শরীয়তের বাহিরে কোনো আদর্শ নেই‌। শরীয়তই মুমিনের সমগ্র জীবনের নীতিনির্ধারক। প্রতিটি মানুষ এক একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। স্বপ্নহীন এবং লক্ষ্যহীন মানুষ জড়বস্তুর ন্যায়। স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে না। তবে একজন অনুশীলনকারী মুসলিমের প্রধান স্বপ্নই হওয়া উচিৎ জান্নাত। দুনিয়াবি বেশকিছু স্বপ্ন লালন করি। পবিত্র কোরআন হিফজ করা- একটি ব্যক্তিগত পাঠাগার তৈরি করা- জীবনে একবার হলেও আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা। ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ কবুল করুন। সর্বোপরি একটি আদর্শ ইসলামিক পরিবার গঠন করার প্রত্যাশা রাখি। ভবিষ্যত প্রজন্মকে উত্তম তারবিয়াত দিয়ে যোগ্য- আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার তামান্না লালন করি। আমি চাই তারা শক্তিশালী ঈমানি জজবা এবং পবিত্রতা নিয়ে বেড়ে উঠবে। ইসলামিক এবং দুনিয়াবি জ্ঞানের সমন্বয়ে তারা যোগ্য- জ্ঞানী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। আমি স্বপ্ন দেখি তারা হবে উত্তম আখলাক সম্পন্ন- বুদ্ধিদীপ্ত- বিচক্ষণ এবং শক্তিশালী। إن شاء الله